শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ০৫:৩৫ পূর্বাহ্ন
কুলাউড়া সংবাদদাতা: কুলাউড়ার কর্মধায় দিলারা বেগম নামে প্রবাসীর তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী ২ সন্তান রেখে উদাও হওয়ার রহস্য উম্মোচন হতে যাচ্ছে। দিলারার পরকিয়া প্রেমিক সজ্জাদ ওরফে টুনটুন পুলিশের হাতে আটকের পর অনেকটা খোলাসা হওয়ার পথে দিলারার উদাও হওয়ার রহস্য।
জানা যায়, প্রবাসী জুনাব আলীর পক্ষ থেকে মৌলভীবাজার পুলিশ সুপারের কাছে আবেদন করলে পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপে কুলাউড়া থানা পুলিশ ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটনের জন্য তৎপর হলে বেরিয়ে আসে প্রবাসীর সাবেক স্ত্রী দিলারা বেগম উদাও হওয়ার আসল রহস্য। উদাও হওয়ার ৬ সপ্তাহ পর গত ৯ জুলাই পুলিশ দিলারার পরকিয়া প্রেমিক টুনটুন ওরফে সজ্জাদ(২২)কে আটক করে আদালতে সোপর্দ করে। টুনটুন ওরফে সজ্জাদ দিলারা বেগমকে তার আতœীয়র বাড়ীতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে অজ্ঞাত স্থানে লুকিয়ে রেখেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। ফলে দিলারা বেগমের ভাই কুটন মিয়ার কুটকৌশল অবশেষে ব্যর্থ হয় বলে পুলিশি হস্তক্ষেপে। অথচ দিলারার ভাই কুটন মিয়া পুলিশের কাছে অভিযোগ করে বলেছিল, তার বোনকে স্বামী জুনাব আলীর আতœীয়স্বজন অপহরন করেছিলেন। কিন্তু দিলারার ২ পুত্র আমিন(১০) ও আমিনুল (৭) এর জবানবন্দির ফলে কুটন মিয়ার কুট কৌশল ভেস্তে যায়।
প্রবাসী জুনাব আলীর পরিবার গত ২৮ জুন মৌলভীবাজার পুলিশ সুপারের কাছে সরাসরি দেখা করেন প্রবাসীর ২ অবুঝ শিশুকে নিয়ে। পুলিশ সুপার ২ শিশুর বক্তব্য ও প্রবাসীর পরিবারের বক্তব্য শুনে বিষয়টি নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(কুলাউড়া সার্কেল)কে নির্দেশ প্রদান করেন। এর প্রেক্ষিতে দিলারার আতœগোপনের তথ্য বেরিয়ে আসতে শুরু করে। যদিও দিলারা বেগম কোথায় আছে তা এখনও জানাতে পারেনি পুলিশ। তবে দিলারার পরকিয়া প্রেমিকের গ্রেফÍারের মাধ্যমে যে ক্লু পেয়েছে পুলিশ তাতে শ্রীঘ্রই দিলারা বেগমকেও পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এব্যাপারে প্রবাসী জুনাব আলীর ভাই আইয়ুব আলী বলেন,‘ তার ভাইয়ের স্ত্রী দিলারার চরিত্র খারাপ। দিলারার সাথে টুনটুনের বিভিন্ন অশ্লীল ভিডিও পেয়ে আমার ভাই দিলারাকে তালাক প্রদান করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে দিলারার ভাই কুটন মিয়া ও দিলারার পরকিয়া প্রেমিক টুনটুন দিলারাকে লুকিয়ে রেখে আমাদেরকে হয়রানির চেষ্টাকরে। আমরা পুলিশি হয়রানি থেকে রক্ষা পেতে পুলিশ সুপারের সাহায্য চাইলে তাঁর হস্তক্ষেপে আমরা রক্ষা পাই। কিন্তু কুটন মিয়া একজন মাদক ব্যবসায়ী ও ভারতীয় চোলাচালান ব্যবসায়ী হওয়ার তার প্রচুর টাকা পয়সা থাকায় সেও এখন ধরাছোয়ার বাহিরে রয়ে গেছে। মূলত কুটন মিয়ার কৌশলেই দিলারা বেগম আতœগোপন গেছে। দিলারার ২ শিশু সন্তান আমাদেরকে এবং পুলিশ সুপারের কাছে কুটন মিয়া তার বোনকে নিয়ে গেছে বলে শিশুরা জানিয়েছে। তাই মূল হোতা কুটনমিয়াকে পুলিশ গ্রেফÍার করবে বলে আমাদের বিশ^াস।’ তিনি আরও বলেন, তার ভাইয়ের জায়গা কিনার প্রায় ৪ লক্ষ টাকাও নিয়ে পালিয়ে যায় দিলারা।
প্রবাসীর ভাগ্না ইসমাইল আলী তালুকদার জানান,দিলারার ভাই কুটন মিয়া বিভিন্ন কুট কৌশলের আশ্রয় নিয়ে আমাদেরকে হয়রানির চেষ্টা করছে। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের জোরদাবী জানাচ্ছি।
কুলাউড়া থানার এসআই পরিমল চন্দ্র দাশ জানান,সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে সজ্জাদ ওরফে টুনটুনকে আটক করেছে পুলিশ। দিলারাকে সে তার আতœীয়ের বাড়ীতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে সেখানে না দিয়ে অন্যত্র সরিয়ে রেখেছে সে অভিযোগে তাকে আটক করা হয়েছে। উল্লেখ্য, কুলাউড়ায় ২ সন্তান রেখে প্রবাসীর স্ত্রী উদাও শীর্ষক সংবাদটি স্থানীয়, জাতীয় দৈনিক পত্রিকা ও অনলাইনে প্রচার হলে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয় সর্বত্র। প্রশাসন সুষ্ট তদন্তের মাধ্যমে প্রবাসীর স্ত্রীকে লুকিয়ে রাখার দায়ে এক যুবককে আটক করেছে ইতিমধ্যে।